এনবি নিউজ ডেস্ক : শুভমান গিলের নামের শুরুতে থাকা ‘শুভ’ যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে গুজরাটের জন্য। ঠিক প্রয়োজনের মুহূর্তেই জ্বলে ওঠেন তিনি। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এসে জ্বলে উঠলেন আবারও৷ জবাবে প্রতিরোধ গড়তে চেয়েছিল মুম্বাই। একটা সময় পর্যন্ত কক্ষপথেই ছিল। কিন্তু মোহিত শর্মা এসে ছাঁই দিলেন মুম্বাইয়ের বেড়ে রাখা ভাতে। তার আগুনে বোলিংয়ে জ্বলেপুড়ে ছারখার পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২৬ মে) মুখোমুখি হয় আইপিএলের সবচেয়ে সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্স। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার হওয়ায় সমীকরণটা এমন জিতলে ফাইনাল, হারলে বাদ। এমন সমীকরণে মুম্বাইকে ৬২ রানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল গুজরাট।
অলিখিত সেমিফাইনালে টস জিতে গুজরাটকে ব্যাটিংয়ে পাঠান মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আগে ব্যাট করে শুভমান গিলের অতিমানবীয় শতকে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে গুজরাট তোলে ২৩৩ রান। জবাবে ১৮.২ ওভারে ১৭১ রানে অলআউট হয় মুম্বাই।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে ঋদ্ধিমান সাহা (১৮) ও শুভমান গিল মিলে ৬.২ ওভারে তোলেন ৫৪ রান। পিযুষ চাওলার বলে ঈষাণ কিষাণের হাতে স্টাম্পড হয়ে ফেরেন ঋদ্ধিমান। এরপর আহমেদাবাদে শুধুই শুভমান শো শুধু চলে। ব্যাট হাতে আরও একবার ঝড় তুললেন এই তারকা। ১৫ তম ওভারের প্রথম বলে ক্যামেরন গ্রিনের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। চারটি চার ও আটটি ছয়ের মারে আহমেদাবাদে ২০০-র বেশি স্ট্রাইক রেটে ৪৯ বলে সেঞ্চুরির ঘরে পৌঁছান শুভমান। শেষ পর্যন্ত শুভমান থামেন ২১৫ স্ট্রাইক রেটে ৬০ বলে ১২৯ রানে থামেন। তার টর্নেডো ইনিংসটিতে চারের মার ছিল সাতটি, ছক্কা দশটি।
৩১ বলে ৪৩ রান করে রিটায়ার্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাঁঈ সুদর্শন। শেষ দিকে গুজরাট অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার ১৩ বলে অপরাজিত ২৮ রানের ক্যামিওতে মুম্বাইকে ২৩৪ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য ছুড়ে দেয় গুজরাট।
শুভমান গিলের অতিমানবীয় ইনিংসের সামনে বল হাতে মুম্বাইয়ের তেমন কেউই সুবিধা করে উঠতে পারেনি। একটি করে উইকেট পান চাওলা ও মাধওয়াল।
জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে মুম্বাই। প্রথম ওভারেই নেহাল ওয়াধিরার (৪) উইকেট হারায় মুম্বাই। তাকে সাজঘরে ফেরান মোহাম্মদ শামি। দলীয় ১৭ রানে কনুইতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ক্যামেরন গ্রিন। ২১ রানে আবারও শামির আঘাত। এবার ফেরান রোহিত শর্মাকে (৮)। প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন তিলক ভার্মা ও সূর্যকুমার যাদব মিলে। ২০ বলেই গড়েন ৫০ রানের জুটি। রীতিমতো তাণ্ডব চালান তিলক। পাঁচ চার ও তিন ছক্কায় ১৪ বলে ৪৩ রান করেন তিলক। তাকে বোল্ড করে ঝড় থামান রশিদ খান। এরপর ফের মাঠে নামেন গ্রিন। ২০ বলে ৩০ রান করে ক্রিজে থিতু হলেন যখন, তখনই তাকে ফেরান জস লিটল। সূর্যকুমার চেষ্টা করেছেন নিজের জায়গা থেকে। খেলেছেনও দারুণ। কিন্তু, ১৫ তম ওভারে বোলিংয়ে এসে এক ওভারে দুই উইকেট তুলে ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে নিয়ে নেন গুজরাট পেসার মোহিত শর্মা। ৩৮ বলে ৬১ করা সূর্যকুমারের পাশাপাশি ফেরান ভিষ্ণু ভিনোদকে।
এরপর আর প্রতিরোধ গড়তে পারেনি মুম্বাই। নিজের দ্বিতীয় ওভারেও জোড়া আঘাত হানেন মোহিত। দুই রানে নেন দুই উইকেট। শেষ পর্যন্ত ১৮.২ ওভারে ১৭১ রানে অলআউট হয়ে ফাইনালের স্বপ্ন ভেঙে যায় মুম্বাইয়ের।
গুজরাটের পক্ষে ২.২ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন মোহিত শর্মা। দুইটি করে উইকেট পান শামি ও রশিদ।
এদিকে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে নাম লিখাল হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটান্স। টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস।