আজকের কথা,বেনাপোল(যশোর): বেনাপোল:: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোরের বেনাপোল কাস্টমস হাউসে ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭ হাজার ২১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৩১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি।
এসময় আমদানি হয়েছে ১৪ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯৮ মেট্রিক টন পণ্য। যা আগের বছরের তুলনায় ৮২,২৪৮ মেট্রিক টন কম। রপ্তানির ক্ষেত্রেও দেখা গেছে মিশ্র চিত্র। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৪৪০.৭৭ মেট্রিক টন পণ্য। যা আগের বছরের তুলনায় ৩০ হাজার ৬৬৫.১৫ মেট্রিক টন কম।
কাস্টমস সূত্র জানায়, আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে ৫,৯৪৮ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও আদায় হয়েছিল ৬,১৬৭.৩৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সে বছরও ২১৯ কোটি ৮ লাখ টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
রাজস্ব বেড়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, কাস্টমসের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা। তবে ব্যবসায়ীদের আরেকটি পক্ষ বলছে আরো বেশি রাজস্ব আহরনের কথা থাকলেও শুল্কফাঁকি দিয়ে আমদানি যোগ্য পণ্য পাচার বাড়ায় তা সম্ভব হয়নি।
বানিজ্যিক সংশিষ্টরা জানান, ভারত-বাংলাদেশ স্থলবাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশই বেনাপোল বন্দর দিয়ে সম্পন্ন হয়। এই বন্দরের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয় এবং সরকার সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে।
সাধারন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ামদানি যোগ্য পণ্য শুর্কফাঁাকি দিয়ে ল্যাগেজ ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে। বৈধ আমদানি পণ্যের সাথেও দূনীতিবাজ ব্যবসায়ীরা মিথ্যা ঘোষনা দিয়ে শুল্কফঁাকি দিচ্ছে। এসব অনিয়ম বন্ধ করতে পারলে লক্ষমাত্রার দ্বিগুন রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।
বেনাপোল আমদানি,রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, পদ্মা সেতু পন্য পরিবহন সহজ করে দেওয়ায় আমদানি সহজ করেছে। এছাড়া বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও বেশি শুল্ক আহরন হয় এমন পণ্য আমদানি বেনাপোল বন্দর দিয়ে বেড়েছে। সঠিক ভাবে শুল্ক আদায় স্বচ্ছতা বাড়ায় রাজস্ব আয় বেড়েছে।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুর রহমান জানান, প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০ ট্রাক পণ্য আমদানি এবং ১৫০-২০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর অবস্থানে থাকায় অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, পূর্ববর্তী ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে। বেনাপোল কাস্টম হাউসে সার্বিক আমদানির পরিমাণ ৮ শতাংশ কম হলেও রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ ১৪ শতাংশ। এটি হাউজের উল্লেখযোগ্য অর্জন। এছাড়া রাজস্ব ফাঁকি রোধে এ বন্দরে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করায় শুল্ক ফাকির প্রবণতা কমে গেছে। কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে রাজস্ব আদায়সহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামিম হোসেন জানান,
বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে, যা ভবিষ্যতে কার্যক্রম আরও গতিশীল এবং রাজস্ব আয় বাড়াতে ভুমিকা রাখবে।।