আসাদুজ্জামান তপন : পদ্মা সেতু চালুর এক বছর পূর্তি হচ্ছে আজ রোববার। গত শুক্রবার পর্যন্ত এই সেতু থেকে সরকার টোল আদায় করেছে প্রায় ৭৯৫ কোটি টাকা। এ সময় সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করেছে ৫৬ লাখের বেশি। সেতু বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চালুর পর পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সহজ করে দিয়েছে। এখন ঢাকার সায়েদাবাদ পার হওয়ার পর থেকে বরিশালে যাওয়া যাচ্ছে তিন–চার ঘণ্টায়। খুলনায় চার ঘণ্টায় পৌঁছে যাচ্ছে মানুষ। মালামাল পরিবহনও হয়েছে সহজ।
তবে যোগাযোগ খাতের যুগান্তকারী এই স্থাপনা নির্মাণ প্রকল্প শেষ হতে দেড় দশক লেগেছে। এর ফলে প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে কয়েক গুণ। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নানা জটিলতার পর দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল দুই ঠিকাদার চীনের। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার। ব্যবহৃত মালামালের ৯০ শতাংশই বিদেশ থেকে কেনা। অর্থ মন্ত্রণালয় যে টাকা বিনিয়োগ করেছে, এর বেশির ভাগই ঠিকাদার ও পরামর্শকদের বিল বাবদ ডলারে পরিশোধ করা হয়েছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয় সেতু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে।
সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর টোল ও যানবাহন চলাচলের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়কে চুক্তি অনুসারে ঋণও পরিশোধ করছেন তাঁরা। তিনি বলেন, জিডিপিতে অবদান ও মানুষের দ্রুত যাতায়াতের মূল্য আরও অনেক।
গত ৫ এপ্রিল পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৫০ টাকা পরিশোধ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। ১৯ জুন ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির ৩১৬ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩ টাকা পরিশোধ করা হয়। দুই দফায় ৬৩২ কোটি ৯৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৪৩ টাকা পরিশোধ করা হলো।
পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থ বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ঋণ চুক্তি অনুযায়ী, ১ শতাংশ সুদসহ ৩৫ বছরে ঋণের টাকা ফেরত দেবে সেতু কর্তৃপক্ষ। অবশ্য ২০০৭ সালে প্রকল্প নেওয়ার সময় পদ্মা সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। সেতু বিভাগকে বার্ষিক হারে টোল দেবে। এর বাইরে গ্যাস কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য সেবা সংস্থাও টোল দেবে। এ ক্ষেত্রে সেতু কর্তৃপক্ষের ঋণের বোঝা কমবে এবং টোল আয়ও বেড়ে যাবে।