মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছেন দেশটির শত শত নাগরিক।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় থাকা মানুষদের মধ্যে বেশিরভাগই চাকমা ও রোহিঙ্গা।
তথ্যটি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, মিয়ানমারে দেশটির সরকারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। এতে মিয়ানমার সীমান্তে আটকে পড়া বসবাসকারীদের মধ্যে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। আহতদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় জীবন বাঁচাতে তারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন। তাদের খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এই মুহূর্তে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক কমিটি অব দ্য রেডক্রসসহ (আইসিআরসি) সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে এসব সীমান্তের লোকজন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করবে। যেটি বাংলাদেশের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, ‘আগে থেকেই আমরা প্রায় ১ মিলিয়নের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছি।’
সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের কোনো লোকজন যাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, সোমবার সকাল ১০টার পর থেকে আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে হেলিকপ্টার থেকে বোমা হামলা করছে মিয়ানমারের বাহিনী।
অন্যদিকে, আরাকান আর্মির আক্রমণের মুখে এ পর্যন্ত ১০৬ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী পুলিশ (বিজিপি) সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে দিয়েছে। আজ বেলা পৌনে ৩টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামের একটি রান্নাঘরে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টার শেলের আঘাতে দুজন নিহত হয়েছেন। নিহত দুজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী, অন্যজন রোহিঙ্গা পুরুষ।
বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর কয়েক মাসে রাখাইন রাজ্য থেকে। রোহিঙ্গা ঢলের ছয় বছরেও একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।
এর আগে দুইবার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের অনীহার কারণে তা ভেস্তে যায়।