আজকের কথা ডেস্ক(বেনাপোল): বেনাপোল বন্দরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মালিক বিহীন অবস্থায় পড়ে থাকা ভারতীয় একটি পণ্যবোঝায় ট্রাক নিয়ে বিভিন্ন মহলে কৌতূহল ও ভীতি বিরাজ করছে। সব নিরাপত্তা ব্যবস্থার চোখে ধুলো দিয়ে বন্দরে প্রবেশ করে ট্রাকটি। তবে কারা কি উদ্দেশ্যে ট্রাকটি অনিয়ম করে বন্দরে নিয়ে এসেছে তা এতদিনে বের করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে ট্রাকটি বন্দরের ৩৬ নাম্বার পণ্যগারের সামনে সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাকর্মীদের নজরবন্দীতে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা বড় ধরনের অনিয়ম বা শুল্কফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছিল মহলটি। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, জব্দ হওয়া ট্রাকটির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে কাস্টমসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এদিকে আমদানি বানিজ্যে অনিয়ম বেড়ে যাওয়ায় গত ১৩ বছর ধরে কাস্টমসের রাজস্ব ঘাটতি যাচ্ছে। সচেতন মহল বলছেন অপরাধীরা পার পেয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার উন্নতি হচ্ছেনা।
কাস্টমস ও বন্দর সুত্রে জানা যায়,ভারত থেকে সে সব পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে সাধারনত একজন সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি ট্রাকটি গ্রহন করে কাস্টমস কার্গো শাখায় তার তথ্য এন্ট্রি করে। পরে বন্দরের রেজিষ্টারে পণ্যগারের নাম উল্লেখ করে সে পণ্যগারে পন্য খালাস করে থাকে। ১৫ ফেব্রুয়ারী ভারত থেকে (WB 11-B 6366) নাম্বারের একটি ট্রাক এসব নিয়ম না মেনেই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সরাসরি বন্দরের ৩৬ নাম্বার পন্যগারের সামনে অবস্থান করে। এর মধ্যেই কাস্টমস ও সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর যায় ট্রাকটি আমদানি শুল্ক ফাঁকি বা বড় ধরনের অনিয়মন করার চেষ্টা করছে। এর পর থেকে ট্রাকটি সিসি ক্যামেরা ও বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের নজরদারীতে রাখা হয়। তবে এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পণ্য চালানটি কেউ নিজের বলে দাবি করেনি। এদিকে ট্রাকটিতে কি পণ্য আছে তা এখনো পর্যন্ত কোন সংস্থা খুলে না দেখায় এনিয়ে বন্দরের কাজ করা সাধারন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কৌতূহল ও ভীতি বিরাজ করছে।
সাধারন আমদানিকারক রুবেল হোসেন জানান,
ট্রাকটিতে কি আছে আর কেন এতদিন পড়ে আছে তা নিয়ে কৌতুহল ও ভীতি বিরাজ করছে। এখন পর্যন্ত ট্রাকটিতে থাকা মালামাল কেউ নিজের দাবি করছেনা।ধারনা করা হচ্ছে শুল্ক ফাঁকির উদ্দেশ্যে ট্রাকটি নিয়ম না মেনে বন্দরে প্রবেশ করেছে। এধরনের নানান অনিয়মের কারনে ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ১২ বছর রাজস্ব ঘাটতি যাচ্ছে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে।
বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল সিরাজী বন্দরকে দেওয়া চিঠিতে জানান, পণ্যবাহী ট্রাকটির আমদানি কারক ঢাকার টি আর অটো মোবাইলস । ট্রাকটিতে ৫১১ কাটুন আইপিএস,ইউপিএস ঘোষণার একটি কাগজ পাওয়া গেছে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ পণ্য চালানটির মালিকানা দাবি করেনি। ভারতীয় ট্রাকটি
পরবর্তী পতক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত ট্রাকটি খালাস বা সরিয়ে না নেয় এজন্য বন্দরের সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাকর্মীদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম মঙ্গলবার সকালে জানান, ট্রাকটি বন্দরে কোথাও এন্ট্রি না করে প্রবেশ করে। ট্রাকটিতে কি আছে এখন পর্যন্ত খুলে দেখা হয়নি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বন্দরে হেফাজতে ট্রাকটি রেখেছেন। তিনি আরো জানান, কোন পণ্য চালান বন্দরে প্রবেশের পর যদি ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না নেয় তবে সেটি নিলাম তালিকায় ওঠার নিয়ম রয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহনে কাস্টমসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।