• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
নিরাপত্তা এলার্ম ব্যবহারের সুবিধা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাকে বেনাপোলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন ভারতে পালানোর সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আ,লীগ নেতা গ্রেফতার। ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতি গতমাসে দেশে বিজিবির হাতে বাং এক মাসে ২২৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা মূল্যের চোরাচালান পন্য আটক যশোরে জামায়াত নেতা হত্যার আসামীসহ ৫ অপরাধী গ্রেফতার ভারতে পালানোর সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আ,লীগ নেতা গ্রেফতার। দ্রব মুল্যের বাজার নিয়ন্ত্রনে বেনাপোলে ভোক্তা অধিকারের সাথে বানিজ্য সংগঠনের বৈঠক বেনাপোলে “হাফওয়ে শেল্টার হোম” উদ্বোধন ডিজিটাল বাণিজ্য নীতিমালায় এলসি ছাড়াই আমদানি-রপ্তানির সুযোগ

আকাশ ছুঁয়েছে রডের দাম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সংবাদটির পাঠক ১৩ জন

এনবি নিউজ : দেশের বাজারে আরেক দফা বেড়ে আকাশ ছুঁয়েছে রডের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে টন প্রতি রডের দাম বেড়েছে চার থেকে ছয় হাজার টাকা। রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, রড তৈরির কাঁচামাল স্ক্র্যাপের দাম বৃদ্ধি, ডলার সংকট, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ায় ও সরবরাহে ঘাটতিসহ নানা কারণেই বাড়ছে রডের দাম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে চার ধরনের এমএস রড বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বা অটো কারখানাগুলোতে তৈরি রড যা ৬৫ গ্রেড বা তার বেশি, সেমি অটো কারখানাগুলোতে তৈরি ৬০ গ্রেড, সাধারণ কারখানায় তৈরি ৪০ গ্রেডের রড রয়েছে। এর বাইরে কোনও সিল বা গ্রেড ছাড়া এক ধরনের রড বাজারে বিক্রি হয়। যে রডগুলো বাংলা রড নামে পরিচিত। তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ৬৫ গ্রেডের উপরের রডগুলোর চাহিদা বেশি রয়েছে।

রাউজান পাহাড়তলী চৌমুহনী বাজারের খুচরা রড বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল মদিসা ট্রেডার্সের মালিক জি এম মোস্তফা বলেন, ‘এক সময় বাজারে চার ধরনের রড বিক্রি হতো। বর্তমানে ৬৫ গ্রেডের উপরে যে রড রয়েছে গ্রাহকের কাছে সেটির চাহিদাই বেশি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মণ প্রতি রডের দাম চার থেকে ছয় হাজার টাকা বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে বিএসআরএম-এর রডের টন বিক্রি করেছিলাম, ৮৯ থেকে ৯০ হাজার টাকা। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৬ হাজার ৫০০ টাকা। কেএসআরএম-এর রডের দাম ৮৭ থেকে ৮৮ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা। একেএস-এর রডের দাম ছিল ৮৭ হাজার ৮৮ টাকা, যা বর্তমানে ৯৪ হাজার টাকা। ৮৮ হাজার টাকা জিপিএইচ-এর রড এখন ৯৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া বায়েজিদ স্টিলের রডের দাম গত সপ্তাহে ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা থাকলেও বর্তমানে ৯৩ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।’

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘রডের পাশাপাশি সিমেন্টর দামও বেড়েছে ব্যাপক হারে। গত এক সপ্তাহে সিমেন্টে বস্তা প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে রুবি সিমেন্ট ৫৪০, কনফিডেন্স ৫১০, রয়েল ৫০০, প্রিমিয়ার ৪৯৫, সেভেন রিংস ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

নগরীর ষোলশহরের পাইকারি রড বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আলমার্স ট্রেডিংয়ের মালিক ইমাম হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ রডের দাম অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে খুচরা ব্যবসায়ীরা বিএসআরএম ৯৬ হাজার, কেএসআরএম ৯৫ হাজার, বায়েজিদ স্টিল ৯৩ থেকে ৯৪ হাজার, একেএস স্টিল ৯৪ হাজার, জিপিএইচ ৯৫ হাজার ও অন্যান্য কোম্পানির রডের টন প্রায় এক থেকে দুই হাজার টাকা কম-বেশিতে বিক্রি করছেন। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা নিজ খরচে পরিবহন করে নিয়ে যান। সেক্ষেত্রে প্রতি টনে দাম ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করেন।’

এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘নির্মাণসামগ্রীর দাম দীর্ঘদিন ধরেই ঊর্ধ্বগতি। বিশেষ করেই রডের দাম আজ একরকম তো কাল অন্যরকম। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর সময় বিশ্ব বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দিয়ে থাকেন। আবার কখনও ডলার সংকটের অজুহাত দেখান। ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ সংকটের কথা বলেন বাস্তবে সংকট এরকম নয়। ক্রমাগত দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের উন্নয়ণ কর্মকাণ্ডসহ ব্যক্তি মালিকানাধীন নির্মাণে মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবে বিষয়টি সরকারের কর্তাব্যক্তিদের নজরে আনা প্রয়োজন। দেখা প্রয়োজন বিশ্ব বাজারের সঙ্গে দেশে বিক্রির পার্থক্য কেমন।’

এ প্রসঙ্গে রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেন গুপ্ত বলেন, ‘রডের বাজারের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। বিএসআরএম-এর রড এখন বাজারে ৯৬ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। বিশ্ব বাজারে রড তৈরির কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, ডলার সংকট, জাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ও মূল্য বাড়ানোর কারণে রডের বাজারে প্রভাব পড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে উৎপাদন কমেছে। শ্রমিক খরচ বেড়েছে। এমনকি শুক্রবার লোকাল শিপ ইয়ার্ডের স্ক্র্যাপ বিক্রি হয়েছে টন ৭০ হাজার টাকা করে। যেখানে স্ক্র্যাপ কিনতে হচ্ছে ৭০ হাজার টাকায়। সেখানে প্রক্রিয়া করে লোহা তৈরিতে অনেক খরচ যোগ হচ্ছে। যার কারণে রডের দাম বাড়ছে।’

কেএসআরএম স্টিলের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন ধরে বিশ্ব বাজারে রড তৈরির কাঁচামাল স্ক্র্যাপের দাম বেড়ে চলেছে। এ ছাড়াও ডলার সংকট একটি বড় কারণ। ডলার সংকটের কারণে ক্রমাগত বাড়ছে আমদানি ব্যয়। সেই সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে রডের বাজারে।’

মিজানুল ইসলাম আরও বলেন, ‘শিপ ইয়ার্ডেও তৈরি হয়েছে জাহাজের সংকট। কারণ ব্যবসায়ীরা এলসি করতে না পারায় পর্যাপ্ত জাহাজ আমদানি সম্ভব হয়নি। এতে করে শিপ ইয়ার্ডে রড তৈরির কাঁচামালের দামও বেড়েছে অনেক। এ কারণে প্রভাব পড়েছে উৎপাদন ব্যয়ে। দাম বাড়ার প্রভাবে বিক্রি কমে গেছে। এতে করে ব্যবসার ধারাবাহিকতা রক্ষা করাও কঠিন হয়ে পড়েছে ইস্পাত খাতের ব্যবসায়ীদের। এ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রডের দাম কমার তেমন সম্ভাবনা নেই।’

বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআর) সহকারী সচিব নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামে একসময় ১৫৪টি শিপ ব্রেকার্স বা শিপ ইয়ার্ড ছিল। বর্তমানে ৩০টির মতো শিপ ব্রেকার্স সচল আছে। এর মধ্যে অধিকাংশ শিপ ব্রেকার্সে জাহাজ নেই। স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি গত কয়েক মাসে অনেক কমে গেছে। বড় স্ক্র্যাপ জাহাজ এখন আমদানি হয় না বললেই চলে। ছোট ছোট কিছু জাহাজ আমদানি হয়েছে। বড় এলসি খোলা বন্ধ থাকার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আগে যেখানে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০টি স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করা হতো, সেখানে আমদানি হয়েছে ৮-১০টি কিংবা আরও কম। এ জন্য স্ক্র্যাপের দাম বেড়েছে।’

এদিকে নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে ফ্ল্যাটের দামও। এ প্রসঙ্গে রিহ্যাব চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি আবদুল কৈয়ূম বলেন, ‘পাগলা ঘোড়ার মতো নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আমরা আতঙ্কে আছি। এক বছরের ব্যবধানে রডের দাম দ্বিগুণ। সিমেন্টে বস্তা প্রতি বেড়ে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। দাম বৃদ্ধির লাগাম টানা প্রয়োজন। এর ফলে ফ্ল্যাটের দামও বাড়ছে। নির্মাণ খাতে নিয়োজিত ব্যবসায়ীরাই এর বড় ভুক্তভোগী।’ এখানে সরকারকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

নগরীর আবাসন প্রতিষ্ঠান সিদরাত সাইফ ডেভেলপার অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনের চেয়ারম্যান এস এম শহিদুল্লাহ বলেন, ‘গত দুই বছরের তুলনায় নির্মাণসামগ্রীর ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ। অথচ আমরা ক্রেতাদের সামর্থ্যের কথা মাথায় রেখে ফ্ল্যাটের দাম দ্বিগুণ বাড়াতে পারিনি। রড, সিমেন্ট, ইট, পাথর, বালুসহ সব ধরনের নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মুখ থুবড়ে পড়বে আবাসন খাত।’

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, দেশে স্বয়ংক্রিয় ইস্পাত কারখানা আছে ৩০টি। সনাতন পদ্ধতির কারখানা আছে ১০০টির মতো। বছরে দেশে রডের চাহিদা আছে ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টন। এ হিসেবে মাসে সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টন রড দরকার হয়। রড তৈরির কাঁচামাল হলো পুরনো লোহার টুকরো। এই কাঁচামাল সরাসরি আমদানি করে প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করেন উৎপাদকরা। বাকি প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ আসে জাহাজ ভাঙা শিল্প এবং লোকাল ভাঙারি বর্জ্য থেকে।

এ টি


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  

নামাজের সময় সূচি

    Dhaka, Bangladesh
    সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
    ওয়াক্তসময়
    সুবহে সাদিকভোর ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ
    সূর্যোদয়ভোর ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ
    যোহরদুপুর ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ
    আছরবিকাল ২:৫৮ অপরাহ্ণ
    মাগরিবসন্ধ্যা ৫:১৮ অপরাহ্ণ
    এশা রাত ৬:৩৯ অপরাহ্ণ