এনবি নিউজ : ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পর আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন। ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের এই সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এই সফরের মধ্য দিয়ে ইউরোপের শক্তিশালী একটি দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারের প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, সাধারণত কোনো দেশের সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানেরা এমন দেশে সফরে যান না। তাই মাখোঁর হঠাৎ ঢাকা সফর কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তখনকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ বাংলাদেশে এসেছিলেন।
অবশ্য ৩৩ বছর আগের তুলনায় এখনকার প্রেক্ষাপট একেবারে ভিন্ন। বৈশ্বিক পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ঘিরে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা এবং অর্থনীতি মিলিয়ে বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়েছে। আবার আফ্রিকা মহাদেশের দেশ নাইজার, বুরকিনা ফাসো, মালি, গ্যাবনসহ বেশি কিছু দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের পর ওই অঞ্চলের সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের প্রভাব ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়েছে। ফলে বন্ধুত্ব জোরদারের মধ্য দিয়ে এশিয়ায় নতুন করে অবস্থান তৈরির বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছে ফ্রান্স।
প্রায় তিন দশক পর ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই সফরের দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি স্যাটেলাইট এবং উড়োজাহাজের বিষয়ে এয়ারবাসের সঙ্গে দুটি এবং স্থানীয় সরকার প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য একটি সম্মতিপত্র সই হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামীকাল সোমবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, প্রায় তিন দশক পর ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই সফরের দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি স্যাটেলাইট এবং উড়োজাহাজের বিষয়ে এয়ারবাসের সঙ্গে দুটি এবং স্থানীয় সরকার প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য একটি সম্মতিপত্র সই হবে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরের সময় এবার নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ নামের স্যাটেলাইটটি একটি আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট বা ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, যার মাধ্যমে মূলত বাংলাদেশের স্থলভাগ ও জলভাগ পর্যবেক্ষণ করা হবে। এই স্যাটেলাইটের জন্য একটি রাডার এবং দুটি অপটিক্যাল রাডার তৈরি করে দেবে ফ্রান্স। আর ফ্রান্সের সহায়তায় স্যাটেলাইটের জন্য বাংলাদেশে কয়েকটি অপটিক্যাল রাডার তৈরি করা হবে।
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২–এর মাধ্যমে ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রটি পৃথিবীর ছবি তুলে বাংলাদেশে পাঠাবে। পুরো বাংলাদেশের স্থলভাগ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের সামগ্রিক চিত্র পাওয়া যাবে। ফলে এর মাধ্যমে নজরদারি জোরদারসহ বাংলাদেশের কোথায়, কখন কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তার পথ সুগম হবে।