আওয়ামী লীগ সরকারের গত দুই নির্বাচনের আগে ছোট হয়েছে মন্ত্রিসভা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেকনোক্র্যাটসহ ৩০ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও সরকারের অনির্বাচিত মন্ত্রী ও উপদেষ্টারা পদত্যাগ করেছিলেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এক মন্ত্রী ঢাকা টাইমসকে বলেন, সরকার নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার আকার আরও ছোট করার চিন্তাভাবনা করছে। এ বিষয়ে আগামী ২৭ নভেম্বর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে গত ২০ নভেম্বর পদত্যাগ করেছেন টেকনোক্র্যাট কোটায় নিয়োগ পাওয়া দুই মন্ত্রী, এক প্রতিমন্ত্রী ও তিন উপদেষ্টা।
পদত্যাগ করা তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হলেন- ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের মধ্যে অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী পদত্যাগ করেছেন।
তবে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান পদত্যাগ করেননি। এদের মধ্যে সালমান এফ রহমান নির্বাচিত সংসদ সদস্য হওয়ায় পদত্যাগ করছেন না বলে জানা গেছে। আর সজীব ওয়াজেদ বেতনভুক্ত নন।
প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য ৪৮ জন। ২৫ মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী এবং ৩ জন উপমন্ত্রী। এর মধ্যে তিনজনের পদত্যাগের ফলে এখনও মন্ত্রিসভার সদস্য ৪৫।
এদিকে গত রবিবার বিকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-উপদেষ্টারা থাকছেন না। তিনি বলেন, ‘যে সরকার রয়েছে, সেই সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হবে। তবে এখানে কোনো টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ও উপদেষ্টা থাকতে পারবেন না।’ ফলে মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের মধ্যে কে থাকছেন কে থাকছেন না তা জানা যাবে ২৭ নভেম্বর।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।
তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর আর প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। প্রচারণা শুরু হবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে, চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।