আজকের কথা ডেস্ক,বেনাপোল(যশোর):: যশোরের বেনাপোল সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের গুলিতে রহিস উদ্দীন নামে বর্ডার বার্ড বিজিবির এক সৈনিক হত্যার শিকার হয়েছেন। তিনি ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির বেনাপোল সীমান্তের ধাণ্যখোলা জেলেপাড়া বিজিবি ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি চাপায়নবাবগঞ্জ।
সোমবার(২২ জানুয়ারি) ভোর ৫ টার দিকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
সীমান্তের সুত্রগুলো জানায়, সোমবার ভোরে ভারতের সুটিয়া সীমান্ত পথে গরু নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালায় পাচারকারীরা। এসময় বিজিবি সদস্য রইস উদ্দীন গতিরোধ করার চেষ্টা করলে চোরাকারবারিরা গরু ফেলে ভারতের দিকে ঢুকার চেষ্টা করে। এতে সুটিয়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা ৭ রাউন্ড গুলি চালালে দুই চোরাকারবারী ভারতে অংশে আহত হয়। এসময় বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়া গরু বিজিবি সদস্যরা উদ্ধার করতে গেলে বিএসএফ রইস উদ্দীন নামে এক বিজিবি সদস্যকে ধরে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে তাকে শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে গুলি করে হত্যা করে বলে জানা যায়।
ঘিবা গ্রামের আব্দুল বারি জানান, তিনি ভোর রাতে পর পর ৭ রাউন্ড গুলির শব্দ পান। পরে ভোরে লোা মুখে শুনতে পান এক বিজিবি সদস্যকে বিএসএফ ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। এটি দুঃখ জনক ঘটনা।
সীমান্ত বাসী করিম জানান, প্রায়ই এ সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে বাংলাদেশি হত্যা ও ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়।
এ ঘটনায় উৎসুক জনতার মধ্যে একজন আমির হোসেন জানান, বিএসএফের হাতে বিজিবি সদস্য হত্যার ঘটনা শুনছি। বাংলাদেশি নাগরীক হিসাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এদিকে ঘটনার ১ দিন পেরিয়ে গলেও এখন পর্যন্ত মরদেহ ফেরত আসেনি। তবে সীমান্তে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে সীমান্ত বাসী।বিজিবির উধ্বতন কর্মকর্তারা সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন।
৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃকর্ণেল জামিল আহম্মেদ প্রেস লিস্ট দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ২২ জানুয়ারি ২০২৪ আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা বিওপি’র জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারীদের সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখলে দায়িত্বরত: বিজিবি টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি টহল দলের সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন চোরাকারবারীদের পিছনে ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে । প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় সে বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার পরপরই এ বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয় এবং জানা যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উক্ত সৈনিক মৃত্যুবরণ করেছে। এ বিষয়ে বিএসএফ কে বিষয়টির ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ লিপি প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও মৃতদেহ বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত আনার বিষয়ে সব পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।