আজকের ডেস্ক:বেনাপোল(যশোর): যশোরের শার্শার সাতমাইলে নাভারন-সাতক্ষীরা সড়কের উপর উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে পশু হাটের কারনে যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যানজটে সড়কটি পার হতে আগের চেয়ে সময় লাগছে বেশি । গত কয়েক বছর ধরে সাধারণ মানুষ এ দূর্ভোগ পোহালেও কারো কোনো মাথাব্যথা নেই । সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার দুই দিন হাট বসে। অবৈধভাবে রাস্তার উপর গরু বেচা-কেনার সুযোগ করে দিয়ে সংশিষ্টরা ফায়দা লুটছে।
এদিকে হাটটি থেকে লাখ লাখ টাকা ভ্যাট আদায় হলেও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই হাটে। সরকার নির্ধারিত ভ্যাট ছাড়া হাট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দ্বিগুন অর্থ আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। হাট সরকার পরিচালনা করলেও সেখানে আধিপত্য রয়ে গেছে ক্ষমতাসীন দলের একটি পক্ষের।
সরকারি নিয়ন অনুযায়ী গরু প্রতি ভ্যাট ৫০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ভ্যাট ২০০ টাকা নির্ধারন থাকলেও হাট কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে গরু প্রতি ১২০০ টাকা ও ছাগল ৫০০ টাকা ভ্যাট আদায় করছে।
এদিকে এ হাট ইজারাদারদের দায়িত্বে থাকাকালিন আগে প্রতি হাটে ১০ লাখের বেশি সরকারি ক্ষাতে ভ্যাট আদায় হলেও এখন উপজেলা প্রশাসন দায়িত্ব নিয়ে আদায় দেখাচ্ছে প্রতি হাটে ৩ লাখ টাকার মধ্যে। এতে সরকার বিপুল পরিমানে রাজস্ব হারাচ্ছে।
গরু ক্রেতা বেনাপোল পৌরসভার নামাজ গ্রামের রাশেদ ইসলাম জানান, লাখ টাকার কিছু বেশিতে তিনি কোরবানির জন্য একটি গরু কিনেছেন। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৫০০ টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও হাট কর্তৃপক্ষ ১২০০ টাকা জোর করে নিয়েছে।
গরু বহনকারী ট্রাক চালক রমজান জানান, জায়গার অভাবে তিনি ফুটপথ ছাড়িয়ে সড়কের উপর ট্রাক রেখে গরু উঠাচ্ছেন। এতে পথচারীদের কাছে তাদেরও কম,বেশি কথা শুনতে হয়।
দূর্ভোগের কথা স্বীকার গরু বিক্রেতা কামাল হোসেন জানান, আগে হাটটি ইজারাদাররা নিয়ন্ত্রন করলেও বর্তমানে গরুর হাটের তদারকি করছেন উপজেলা প্রশাসন। গরুর হাটটি আগে রাস্তার পাশে অবস্থিত একটি মাঠে থাকলেও এখন প্রধান সড়কের দু’পাশে এমনকি রাস্তার উপর বেচা-কেনা হচ্ছে। ফলে রাস্তার দু’ধারের দোকান-পাট গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
গরু ক্রেতা যশোরের রমজান জানান, সরকারি নিয়ন অনুযায়ী গরু প্রতি ভ্যাট ৫০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ভ্যাট ২০০ টাকা নির্ধারন থাকলেও হাট কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে গরু ১২০০ টাকা ও ছাগল ৫০০ টাকা ভ্যাট আদায় করছে।
গরু ক্রেতা আব্দুল জলিল জানান, এই হাটের কারণে সবসময় গরুর মল ও আবর্জনা রাস্তার উপর জমে থাকায় ও গরু বহনকারী ট্রাক, নসিমন, করিমনের ভিড়ে পথচারী ও যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হয়।
এভাবে ব্যবসায়ীদের গরু বেচা-কেনার সুযোগ করে দিয়ে মহলটি প্রতিদিন লাখ-লাখ টাকা সুবিধা নিচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন এটি নিয়ন্ত্রন করায় কেউ অভিযোগ করতেও সাহস পান না।
বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক জানান, যখন গরুহাট ইজারাদারের হাতে ছিল তখন প্রতি হাটে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা সরকারের ক্ষাতে রাজস্ব আয় হতো। কিন্তু বর্তমানে এহাট উপজেলা প্রশাসনের হাতে থাকায় ৩ লাখ টাকা রাজস্ব আয় কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি এলাকার উন্নয়ন কাজ ব্যহত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শার্শার নাভরন হাইেয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সিদ্ধার্থ সাহা জানান, পথচারীদের দূর্ভোগ এড়াতে সড়কের গাঁ ঘেষে বা উপরে গরু হাট বসা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে সাতমাইল গরু হাটে যদি অনিয়ম হয় তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী সড়কের উপর গরু হাটে যানজটের কথা শিকার করে জানান, সড়কের উপর যাতে যানজট না হয় খেয়াল রাখা হবে । অতিরিক্ত ভ্যাট আদায়ের বিষয়ে বলেন, তাদের এ ব্যাপারে কোন কোন ক্রেতা অভিযোগ করেনি।