এনবি নিউজ ডেস্ক : আটলান্টিক মহাসাগরে হারিয়ে যাওয়া ডুবোযান টাইটানে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয় বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড। গভীর সমুদ্রের এ যানটির আরোহীদের কেউই বেঁচে নেই বলেও নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এমনটি জানানো হয়।
এদিকে মার্কিন নৌবাহিনীও টাইটান নিখোঁজ হওয়ার দিন অস্বভাবিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়ার দাবি করেছে। বাহিনীটির এক কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যমে সিবিএস নিউজকে এ তথ্য জানান।
গত রোববার উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে পড়ে থাকা টাইটানিক জাহাজ দেখতে পাঁচ আরোহী নিয়ে সমুদ্রে ডুব দেয় মার্কিন কোম্পানি ওশানগেটের ছোট আকৃতির ডুবোযানটি। এর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই এটির সঙ্গে উপরে থাকা জাহাজের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান।
এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মুগের জানান, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছেই ডুবোযানটির ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পান তারা। সেখানে টাইটানের পাঁচটি বড় অংশ পাওয়া যায়। আর এসব অংশ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পানির নিচে যাওয়ার পর এতে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয়েছিল।
এদিকে টাইটানে থাকা পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তাঁর ছেলে সুলেমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম সংস্থা এনগ্রো কর্পোরেশন লিমিটেড। এ কোম্পানিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে দায়িত্বরত ছিলেন শাহজাদা।
এদিকে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিংয়ের (৫৮) প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক অ্যাভিয়েশন সংস্থা অ্যাকশন অ্যাভিয়েশনও তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।
এছাড়া এক বিবৃতিতে সাবমেরিনটির চালক ও ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পল হেনরি নারগিওলেটের (৭৭) পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা তাঁকে আজকে, প্রতিদিন ও বাকি জীবন মিস করব।
সাবমেরিনে থাকা যাত্রীরা হলেন-ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং (৫৮), ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ওশনগেটের শীর্ষ নির্বাহী স্টকটন রাশ (৬১) ও সাবমেরিনটির চালক ও ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পল হেনরি নারগিওলেট (৭৭)।
প্রসঙ্গত, ১৯১২ সালে পর্যটকবাহী জাহাজ টাইটানিক ডুবে যায়। যার ধ্বংসাবশেষ রয়েছে উত্তর আটলান্টিকের তলদেশে। যেটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ১২৩ ফুট গভীরে পড়ে আছে। সেটি দেখতে মার্কিন কোম্পানি ওশানগেটের সাবমেরিন টাইটানে চেপে রোববার কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড প্রদেশের সেন্টজন শহর থেকে রওনা হন ওই পাঁচ পর্যটক। এই অভিযানে যাওয়ার জন্য প্রত্যেক অভিযাত্রীর মাথাপিছু খরচ হয়েছে আড়াই লাখ ডলার।