এনবি নিউজ : একের পর এক সুযোগ নষ্ট করল চেলসির খেলোয়াড়রা। প্রথমার্ধেই দুই গোল করে চালকের আসনে বসে যাওয়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বিরতির পর জালের দেখা পেল আরও দুইবার। দারুণ জয়ে প্রিমিয়ার লিগের টেবিলে শীর্ষ চারে থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা নিশ্চিত করে ফেলল এরিক টেন হাগের দল।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বৃহস্পতিবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৪-১ গোলে জিতেছে ইউনাইটেড। কাসেমিরো দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর জালের দেখা পান অঁতনি মার্সিয়াল, ব্রুনো ফের্নান্দেস ও মার্কাস র্যাশফোর্ড। শেষ দিকে ব্যবধান কমান জোয়াও ফেলিক্স।
এই জয়ে তিনে উঠে গেল ইউনাইটেড। শেষ হয়ে গেল লিভারপুলের শীর্ষ চারে থাকার কিঞ্চিৎ সম্ভাবনাটুকু।
সেরা চারের ফয়সালা হয়ে গেল শেষ রাউন্ডের আগেই। ইংলিশ ফুটবল থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে ম্যানচেস্টার সিটি, আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও নিউক্যাসল ইউনাইটেড।
৩৭ ম্যাচে ২২ জয় ও ৬ ড্রয়ে টেন হাগের দলের ৭২ পয়েন্ট। ৭০ পয়েন্ট নিয়ে চারে নিউক্যাসল। আর্সেনালের ৮১ ও চ্যাম্পিয়ন সিটির ৮৯ পয়েন্ট।
৬৬ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে লিভারপুল। ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বাদশ স্থানে চেলসি।
ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে এফএ কাপ ফাইনালের ৯ দিন আগে টেন হাগের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে পারে চেলসির বিপক্ষে আন্তোনির চোট। প্রথমার্ধে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয় ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে।
চতুর্থ মিনিটেই প্রথম সুযোগটি পায় চেলসি। কিন্তু বক্সের ভেতর সতীর্থের পাস ভালো পজিশনে পেয়ে ঠিকমতো শটই নিতে পারেননি মিখাইলো মুদ্রিক। উল্টো দুই মিনিট পর গোল খেয়ে বসে সফরকারীরা। বাঁ দিক থেকে ক্রিস্তিয়ান এরিকসেনের ফ্রি কিকে ছয় গজ বক্সের মুখে হেডে ইউনাইটেডকে এগিয়ে নেন কাসেমিরো।
ভিএআর পরীক্ষায় টিকে যায় কাসেমিরোর গোল। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জালের দেখা পেলেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। চলতি প্রিমিয়ার লিগে তার মোট গোল হলো চারটি।
২০তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ একটি সুযোগ পান মার্সিয়াল। আন্তোনির পাস বক্সে পান তিনি। তার সামনে একমাত্র বাধা গোলরক্ষক, কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি ফরাসি ফরোয়ার্ড।
২৫তম মিনিটে চেলসির ডিফেন্ডার ট্রেভো চালোবাহর চ্যালেঞ্জে অ্যাঙ্কেলে আঘাত পান আন্তোনি। মাঠে কিছুক্ষণ চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে বাইরে নেওয়া হয় স্ট্রেচারে করে। তার বদলি নামেন র্যাশফোর্ড। চোট ও অসুস্থতায় দলের আগের দুই ম্যাচে তিনি খেলতে পারেননি।
৩২তম মিনিটে ভেস্তে যায় চেলসির কাই হাভার্টজের প্রচেষ্টা। লুইস হলের ক্রসে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। যোগ করা সময়ের শুরুতে আরেকবার হতাশা সঙ্গী হয় তাদের। এনসো ফের্নান্দেসের পাস বক্সে পেয়ে বাইরে মারেন কনর গ্যালাঘার।
খানিক পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে চেলসির ঘুরে দাঁড়ানোর পথ আরও কঠিন করে ফেলে ইউনাইটেড। কাসেমিরো দারুণ ফ্লিকে বক্সে বল দেন জেডন স্যানচোকে। এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড পাস দেন অন্য পাশে মার্সিয়ালকে। ফাঁকা জালে বল পাঠান ২৭ বছর বয়সী ফুটবলার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। কিন্তু ব্রুনো ফের্নান্দেসের শট পোস্টে লাগে। ৭৩তম মিনিটে এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডারই স্কোরলাইন ৩-০ করে ফেলেন সফল স্পট-কিকে। তিনি নিজেই ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি।
পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়িয়ে সব অনিশ্চয়তার ইতি টেনে দেন র্যাশফোর্ড। তার প্রথম প্রচেষ্টা গোলরক্ষক ঠেকানোর পর ফিরতি বল জালে পাঠান ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইউনাইটেডের জার্সিতে র্যাশফোর্ডের গোল হলো ৩০টি। ২০১২-১৩ মৌসুমে রবিন ফন পার্সির পর এই প্রথম দলটির কোনো খেলোয়াড় এক মৌসুমে এত গোল করতে পারলেন।
৮৪তম মিনিটে পাঁচ নম্বর গোলের দেখাও পেয়ে যেতে পারত স্বাগতিকরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা তরুণ আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আলেহান্দ্রো গারনাচোর প্রচেষ্টা ক্রসবারে লাগে। নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে নিচু শটে চেলসির হারের ব্যবধান কমানো গোলটি করেন ফেলিক্স।