আফ্রিকার দেশ সেনেগালে বিরোধী নেতা ওসমান সোনকোর বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং যুবকদের ভুল পথে পরিচালিত করার অভিযোগ উঠেছিল। এর মধ্যে দ্বিতীয় অভিযোগটি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। এর প্রতিবাদে স্থানীয় সময় শুক্রবার (২ জুন) সকাল থেকে এই রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এতে ৯ জন মারা গেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে সেনেগালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেলিভিশনে বলেন, দুটি শহরে বিক্ষোভে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোনকো ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। কিন্তু য়ুবকদের ভুল পথে পরিচালিত করার অভিযোগে তার দুই বছরের জেল হয়েছে। সোনকো যুবকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়।
সোনকো অভিযোগ করেছিলেন, তিনি যাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, সেজন্য ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি বিচার প্রক্রিয়া বয়কট করেছিলেন। কিন্তু রায় ঘোষণার আগে তাকে জোর করে দেশটির রাজধানী ডাকারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালতের রায়ের পরই সেনেগালের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়। বাসে আগুন ধরানো হয়। দাঙ্গাবিরোধী পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। সোনকোর দল পিএএসটিইএফ বলেছে, এই রায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছুই নয়।
ডাকারে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যায়। সেখানে একাধিক বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সরকারি মুখপাত্র অবশ্য দাবি করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
গতবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সোনকো তৃতীয় হয়েছিলেন। সেনেগালের নিয়ম হলো, কোনো রাজনীতিক যদি গুরুতর অপরাধে শাস্তি পান, তাহলে তিনি আর প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে পারবেন না।
যুবকদের বিপথে পরিচালিত করার থেকে ধর্ষণ অনেক গুরুতর অপরাধ। তবে যুবকদের বিপথগামী করার জন্য সোনকো আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ধর্ষণের মামলায় অবশ্য সোনকোর শাস্তি হয়নি। অভিযোগ ছিল, একটি ম্যাসাজ পার্লারের নারীকে যৌননিগ্রহ করেছেন এবং হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এজন্য তার ১০ বছর জেল চেয়েছিলেন আইনজীবীরা। কিন্তু আদালত জানিয়েছে, এই অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ নেই।