পুত্রের প্রেমিকা ডিম্পলকে প্রকাশ্যে চুমু, কেন এমন করলেন ধর্মেন্দ্র ?
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ :
সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩
সংবাদটির পাঠক ৪ জন
আসাদুজ্জামান তপন : সদ্য মুক্তি পেয়েছে রণবীর সিংহ এবং আলিয়া ভট্ট অভিনীত ‘রকি অওর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবিটি। বলিপাড়ায় কেরিয়ারের ২৫ বছর পূর্ণ করলেন কর্ণ। কিন্তু ছবি মুক্তির পর পর্দায় রণবীর-আলিয়ার সম্পর্কের রসায়নের পাশাপাশি দর্শকের নজর কেড়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্র এবং অভিনেত্রী শাবানা আজ়মি।
‘রকি অওর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবিতে রানির দাদু এবং ঠাকুমার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ধর্মেন্দ্র এবং শাবানা। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে পর্দায় ফুটে উঠেছে দুই তারকার চুম্বন দৃশ্য। এই দৃশ্য নিয়ে আলোচনার ফাঁকেই ধর্মেন্দ্রের জীবনের অতীতচর্চা শুরু হয়। পুত্রের ‘প্রেমিকার’ ঠোঁটেও নাকি চুমু এঁকে দিয়েছিলেন অভিনেতা।
১৯৭৩ সালে বলি অভিনেতা রাজেশ খন্নাকে বিয়ে করেছিলেন ডিম্পল কপাডিয়া। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছর পরেই আলাদা থাকতে শুরু করেন ডিম্পল। দুই কন্যাকে একা হাতে বড় করে তোলা, আবার নিজের কেরিয়ার, সংসার সামলানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অভিনয় থেকে দীর্ঘ বিরতি নেওয়ার পরে আবার বলিপাড়ায় ফিরে আসেন ডিম্পল।
আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে আবার বড় পর্দায় ফিরে আসেন ডিম্পল। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, আবার কাজ শুরু করবেন বলে চিত্রনাট্যের মান নিয়ে তেমন কোনও বাছবিচার করতেন না অভিনেত্রী।
স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, তার উপর আবার নিজের কেরিয়ার গড়ে তোলার চেষ্টা, এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ডিম্পলের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্রের পুত্র সানি দেওল।
নব্বইয়ের দশক থেকেই বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যেত যে, সানি এবং ডিম্পলের মধ্যে শুধুমাত্র বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নেই। ১৯৮৪ সালে পূজা দেওলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন সানি। অন্দরমহল থেকে খবর ভেসে উঠতে শুরু করেছিল যে, ডিম্পলের সঙ্গে সানি বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে রয়েছেন।
সানি এবং ডিম্পলের মধ্যে কেউ নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানাননি। কিন্তু অভিনেত্রীর কেরিয়ার নতুন ভাবে গড়তে সানি যে ভাবে ডিম্পলকে সাহায্য করছিলেন তা বলিপাড়ার সকলের নজরে পড়েছিল। তার মাঝেই ডিম্পলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে ধর্মেন্দ্রের নাম।
ধর্মেন্দ্র তাঁর কেরিয়ারে অ্যাকশন ছবির ‘হিরো’ হিসাবে যতটা প্রশংসা অর্জন করেছিলেন, রোম্যান্টিক ঘরানার ছবির অভিনেতা হিসাবেও কম বাহবা পাননি। তবে চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে ছবিতে কোনও চুম্বন দৃশ্যের প্রয়োজন হলে ধর্মেন্দ্রকে সরাসরি দেখানো হত না। ক্যামেরার লেন্সের মুখ তখন ঘুরে যেত প্রকৃতির দিকে, নয় তো রঙিন ফুলের দিকে। তবে, ডিম্পলের ক্ষেত্রে কাহিনি বদলাল কেন?
১৯৯১ সালে বলি পরিচালক অনিল গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘দুশমন দেবতা’ ছবিটি। ধর্মেন্দ্রের বিপরীতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ডিম্পল। তা ছাড়া গুলশন গ্রোভার এবং আদিত্য পাঞ্চোলির মতো বলি তারকাদের এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল।
‘দুশমন দেবতা’ ছবিটি মুক্তি পেয়েও বক্স অফিস হোক বা দর্শকমন কোথাও সাড়া ফেলতে পারেনি। কিন্তু প্রচারে আসে ধর্মেন্দ্র এবং ডিম্পলের চুম্বনের দৃশ্য।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘দুশমন দেবতা’ ছবিতে যে ধর্মেন্দ্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে হবে সে বিষয়ে ছবি নির্মাতারা কিছুই জানাননি ডিম্পলকে।
শুটিং শুরু হওয়ার পর আচমকা ডিম্পলের ঠোঁটে চুমু এঁকে দেন ধর্মেন্দ্র। কয়েক সেকেন্ডের ঘটনায় চমকে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী। কী হল তা বুঝে ওঠার চেষ্টা করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন এই দৃশ্যটি আসলে ছবির অংশ।
চুম্বনদৃশ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন ধর্মেন্দ্র এবং শুটিং দলের অন্য সদস্যরা। কিন্তু ছবি নির্মাতারা শুটিংয়ের আগের মুহূর্ত পর্যন্তও ডিম্পলকে সেই বিষয়ে কিছু জানাননি। এই ঘটনায় রেগে যান ডিম্পল।
ছবি থেকে যেন চুম্বনের দৃশ্যটি বাদ দিয়ে দেওয়া হয় তা নিয়ে ছবি নির্মাতাদের অনুরোধও করেন ডিম্পল। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। এই দৃশ্য কোনও ভাবে বাদ দেওয়া যাবে না তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন ছবি নির্মাতারা।
রাগের চোটে ডিম্পল ছবি নির্মাতাদের জানিয়ে দেন যে, ভবিষ্যতে তিনি ‘দুশমন দেবতা’ ছবির ডাবিংয়ের কাজ করবেন না। কানাঘুষো শোনা যায়, এই সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন ডিম্পল।
যে সময় বলিপাড়ায় সানির সঙ্গে ডিম্পলের প্রেমের কাহিনি বুনোট বাঁধছিল, ঠিক সেই সময় ধর্মেন্দ্র বড় পর্দায় ডিম্পলকে চুমু খাওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন সে বিষয়ে আজও নানা রকম আলোচনা-বিতর্ক হয়।
বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে বেশি কাজের সুযোগ পাচ্ছিলেন না ধর্মেন্দ্র। মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাবও বিশেষ পাচ্ছিলেন না তিনি। তাই যে কোনও ভাবে পর্দায় নিজের ছাপ ফেলতে চেয়েছিলেন। এমনকি কম বাজেটের একাধিক ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে কি পর্দায় ছাপ ফেলতেই কি ধর্মেন্দ্র এই বদল নিয়ে এসেছিলেন? সেই প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে।